শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮

Subject Review on CSE ( Computer Science and Engineering )

Subject Review on CSE ( Computer Science and Engineering )

    - CSE তে পড়বো, পড়াশুনা করতে ভালো লাগে না আর । টাকা ইনকাম করবো এখন ।     - আচ্ছা, এর সাথে CSE এর কি সম্পর্ক ? - তুই দেখি কিছুই জানিস না । এক ভাইকে দেখছি , আউটসোর্সিং করে অনেক টাকা ইনকাম করে        । আর CSE তে রেসাল্ট খারাপ হইলেও কোন সমস্যা নেই । একজন ভাই ফেল করছিল , কিন্তু তবুও লাখ লাখ টাকা বেতনের চাকরী করতেছে।

এই ধরনের চিন্তা থেকে যদি CSE পড়তে আসতে চাও, তবে তোমাকে আমি আশ্বাস দিতে পারি , তুমি হতাশ হতে চলেছো । তাই এই মূহুর্তে তোমার ডিসিশন শিথিল করে বাকিটুকু পড়তে পারো ।
এখন CSE অনেকটা ট্রেন্ডিং একটা সাব্জেক্ট । সবার মুখে মুখে এর নাম শোনা যায় । এই সাব্জেক্টে পড়তে পারলে একটা ভাব হয় । আমি আশা করবো শুধু এই কারণে তুমি যেন CSE পড়তে না আসো ।
কি ধরনের কোয়ালিটি থাকলে তুমি CSE পড়তে এসে মজা পাবা, CSE তোমার পছন্দের সাব্জেক্ট হতে পারে ।
লেগে থাকার অভ্যাসঃ লেগে থাকার অভ্যাস একটা দক্ষতা । ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ১২ পর্যন্ত যখন ম্যাথ করতাম তখন কি কখনো ভাবতাম এগুলো কেন করতাম ? যদি কারো নিজে নিজে সেগুলো চেষ্টা করার অভ্যাস থেকে থাকে , একাই একাই ম্যাথ বা অন্য প্রব্লেম সলভ করার অভ্যাস থেকে থাকে , একবার না পারলে সেটা ছেড়ে দেয়ার পরও আবার মাথায় সেই প্রব্লেম ঘুরতে থাকে, সমাধানের হাজারটা উপায় খুঁজতে থাকো,  তবে CSE তোমাকে হতাশ করবে না কখনো । চারটি বছর অনেক আনন্দময় হবে ।
বিশ্লেষণ ক্ষমতা (Analytical Skill):   আমরা সাধারণত যাদের বিশ্লেষণ ক্ষমতা অনেক ভালো তাদের ক্রিয়েটিভ বলে ফেলি । এই বিশ্লেষণ ক্ষমতা আসলে কি ?  এটি হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ, সেগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে কোন সমস্যা সমাধানের একটা দক্ষতা । তোমার কাছে যে তথ্যগুলো থাকবে সেগুলো ব্যবহার করেই একটা ডিসিশন মেকিং, একটা বেস্ট ডিসিশন মেকিং । এখানে বলে রাখি, যাদের HSC তে ম্যাথ আর থিওরিক্যাল বিষয়গুলোতে ইন্টেরেস্ট ছিলো বেশি তারা এই বিষয়টা উপভোগ করবা । তোমাকে হতে হবে একজন প্রব্লেম সলভার, একজন নতুন আইডিয়া জেনারেটর ; প্রবলেম সল্ভিং তোমার জন্য এক খেলার মতো উপভোগ্য একবিষয় ।
আমি মনে হয়, তোমাদের CSE নিয়ে ডিমোটিভেট করে ফেললাম কাউকে কাউকে। কিন্তু তোমাকে যাতে CSE নিয়ে পড়ার সময় হতাশ হতে না হয়, সেজন্য বাকি অংশটুকু পড়ে ফেলো একটু সময় নিয়ে ।
এই সাব্জেক্টের কি কি ল্যাব আছে, সেটা এক ঝলকে দেখে ফেলা যাক ।

   Introduction to Computer
   Structured Programming Laboratory (C Language)
    Computer Aided Design Laboratory
   Object Oriented Programming Laboratory
   Data Structures and Algorithms
   Advanced Programming
   Algorithm Analysis and Design Laboratory
   Microprocessors and Microcontrollers Laboratory
    Numerical Methods Laboratory
   Web Programming Laboratory
   Database Systems Laboratory
    Software Engineering and Information Systems Laboratory
   Peripherals and Interfacing Laboratory
   System Development Project
   Operating Systems Laboratory
   Complier Design Laboratory
   Mobile Computing Laboratory
   Computer Networks Laboratory
   Artificial Intelligence Laboratory
    Technical Writing and Seminar

এগুলো নিয়ে গুগল করো, এসব নিয়ে তোমার ইন্টারেস্ট কাজ করে কি না ? এমন গুগল করে করে শেখার অভ্যাস খুব জরুরি । এই সাব্জেক্ট এ পড়তে হলে অনেক কিছুই তোমার নিজে নিজে শিখে নিতে হবে । সেই মাইন্ডসেট নিয়েই যেন তুমি আসো, খেয়াল রাখবে অবশ্যই ।
আমি ধরে নিচ্ছি , প্রোগ্রামিং, অ্যালগরিদম, ডেটাবেজ, অপারেটিং সিস্টেম সহ রিলেটেড বিষয় গুলো নিয়ে তুমি HSC ICT তে ধারণা অর্জন করে ফেলেছ । আরো একটু ভালো ধারণা অর্জনের জন্য এই লেখাটা পড়তে পারো ।
CSE পড়ে কি করবো ?

   এখন আমরা প্রযুক্তির যে পর্যায়ে বসবাস করছি , এখনের Social Problem গুলোর বেস্ট সলুশনগুলো হবে ICT Based সলুশন । সেক্ষেত্রে CSE এর স্টুডেন্টরা এগিয়ে থাকবে ।
   বাংলাদেশে যখন টেলিকম কম্পানিগুলো তাদের নেটওয়ার্ক বাড়ানো কাজ করছিল তখন প্রচুর পরিমাণে EEE  ইঞ্জিনিয়ার দরকার ছিল । কিন্তু তাদের নেটওয়ার্ক বাড়ানোর কাজ শেষে তারা এখন ভ্যালু সার্ভিসগুলোতে মনোযোগ দিচ্ছে । আর এখনেই CSE এর স্টুডেন্টদের প্রয়োজন ।
   বাংলাদেশে CSE পড়ে তোমার ক্যারিয়ার কি হতে পারে। এখানে পড়ে ফেল ঝটপট ।
   অ্যান্ড্রয়েড আপ ডেভেলপ করেও তা প্লে স্টোরে রেভিনিউ জেনারেট করতে পারো । কিংবা আইফোনের জন্যও অ্যাপ ডেভেলপ করতে পারো । কোন একটি ভালো অ্যাপের রেভিনিঊ ৬ ডিজিটের সংখ্যা বা তারচেয়ে বেশি হতে পারে । এক্ষেত্রে মানুষের প্রবলেম সলভ করাটাই মেইন কনসার্ন হওয়া উচিত ।
   · তুমি চাইলে নিজেই একটা Start Up দিয়ে ফেলতে পারবে । শুধু কম্পিউটার আর তোমার ব্রেইন দিয়েই তুমি একটা কোম্পানি শুরু করে দিতে পারো । তোমার কোম্পানী তুমিই CEO , কি মজা , তাই না ।
   বাংলাদেশে CSE graduate দের সেলারি সাধারন 40K+ হয়, ৬ মাস চাকরী করার পর 60-70k । আবার এখানে একটা মজার ব্যাপার ঘটতে দেখবে , CSE graduate দের কেউ দেখবে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার আগেই জবের অফার পাচ্ছে , আবার কেউ জবই পাচ্ছেই না , শেষে 10-20k সেলারির চাকুরি করতে হচ্ছে । আবার কাউকে দেখবে দেশেই 100k+ সেলারি পাচ্ছে । আর দেশের বাইরে যেতে চাইলে সেলারি কয়েক গুণ বেড়ে যাবে । তোমার দক্ষতাই তোমার পরিচায়ক।
   আউটসোর্সিং করেও তুমি ভালো ইঙ্কাম করতে পারবে । একেকটা আপ ডেভেলপমেন্টের প্রোজেক্ট ৫০০ ডলার থেকে শুরু করে ১৫০০+ ডলার হতে পারে । আবার গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, ওয়েব ডেভেলমেন্টের অনেক কাজ করেও অনেকে মোটা অংকের প্রফিট জেনারেট করে । তবে ক্যারিয়ার হিসেবে আউটসোর্সিং দীর্ঘমেয়াদি কোন ক্যারিয়ার হতে পারে না বলে অভিজ্ঞরা মতামত দেন ।
    প্রোগ্রামিং এ আনন্দ না পেলে নেটওয়ার্কিং এ ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ আছে তোমার জন্য । তবে প্রোগ্রামিং এ আনন্দ না পেলে গ্রাজুয়েশনের ৪ বছর যে আনন্দদায়ক হবে না তা আশা করি বুঝতেই পারছো এতক্ষণে ।

নিচের বিষয়গুলো নিয়ে অতি আগ্রহীরা একটু নেটে সার্চ করতে পারো ।

   আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভবিষ্যতে নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে । তুমি যে ফেসবুক ব্যবহার করো , কখনো কি ভেবে দেখেছো ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে দেয়া তোমার ছবিটাতে নিজে নিজে কি করে চিনে নিচ্ছে ।
   বাংলাদেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি, মানে অনেক পরিমাণ ডাটা ( Big Data)। মেশিন লার্নিং অনেক সম্ভাবনাময় একটা ক্ষেত্র হতে চলেছে আগামীতে।
   ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing) নিয়ে ঘাটতে পারো ।

অনেক কথা হলো এবার কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং নিয়ে কিছু বলি,
কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং (Competitive Programming) হচ্ছে অনলাইন ভিত্তিক ( বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ) এক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা । কিছু সমস্যা দেয়া থাকবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলো সমাধান করতে হবে । কিছু ওয়েবসাইটে এগুলো আয়োজন করে থাকে । সবার র‍্যাংকিং করে । তুমি সারা বিশ্বের সেরা প্রোগামারদের সাথে প্রতিযোগিতা করার এক অসাধারণ সুযোগ পাবে। আবার কোন কোন কন্টেস্টে বেশি ভালো করলে বড় বড় কোম্পানি গুলো ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকে । কখনো কখনও কন্টেস্টে ভালো করলে প্রাইজ মানি থাকে , কি মজা ! এই কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং যে কতটা আনন্দময় আর আমেইজিং একটা কিছু হতে পারে , নিজে পারটিসিপেট না করলে বুঝতে পারবে না। এবার এই আনন্দ পেয়েছে এমন কয়েকজনের কথা বলি ।
Special Group Interested in Programming Contest , ছোট করে SGIPC । KUET এর একটা ক্লাব । নাম শুনেই বুঝতে পারছো এই ক্লাবের কাজ কি হতে পারে । কিন্তু যেটা বুঝতে পারছো না , তা হচ্ছে এর সাথে যুক্ত কিছু মানুষ , তাদের প্রোগ্রামিং এর প্রতি ভালোবাসা । এরা হচ্ছে “নিজের খেয়ে বনের মহিষ তাড়ানো” টাইপ মানুষ । সকাল ৮ টা থেকে ক্লাস , বিকেলে আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ল্যাব করে ক্লান্ত হওয়ার পর, সন্ধায় কিছু ছেলে-মেয়েদের প্রোগ্রামিং শেখানোর জন্য নতুন করে উদ্দীপ্ত হয়, সেই উদ্দীপনা তাদের ক্লান্তি দূর করে দেয় । প্রোগ্রামিং এর সব ধরনের হেল্প করার জন্য তারা আছে সবসময় ।
স্টিভ জবসের একটা কথা বলে শেষ করবো ,

"Your work is going to fill a large part of your life, and the only way to be truly satisfied is to do what you believe is great work. And the only way to do great work is to love what you do. If you haven't found it yet, keep looking. Don't settle. As with all matters of the heart, you'll know when you find it."

সবকিছুর পরে নিজের লাইফ, নিজে বুঝে ডিসিশন নিবা । সবগুলো কথা মাথায় রেখে, নিজের ইচ্ছাতেই যদি CSE পড়তে চাও, তবে তোমার জন্য এক স্বপ্নময় সুন্দর সময় অপেক্ষা করছে । WELCOME TO KUET CSE .

                                                      
রেজওয়ান আল কাওসার                                                         CSE 2k16, KUET

Socializer Widget By Blogger Yard
SOCIALIZE IT →
FOLLOW US →
SHARE IT →

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Subscribe For Free Updates!

We'll not spam mate! We promise.