রবিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(চুয়েট/সি ইউ ই টি) চুয়েট ভর্তি পরীক্ষা

২ নভেম্বর চুয়েট ভর্তি পরীক্ষা ২০১৮ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।চুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে এমন অনুজদের জন্যই আজকের লিখা।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(চুয়েট/সি ইউ ই টি) বাংলাদেশের প্রথম সারির প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে অন্যতম।১০ টি ডিপার্টমেন্ট এবং ৫ টি ফ্যাকাল্টির সমন্বয়ে আমাদের এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(বিস্তারিত সার্কুলারে)।
এবার আসি পরীক্ষা সম্পর্কিত কিছু কথায়।কত নাম্বারের পরীক্ষা,কত সময়ের,বিষয় কি কি থাকবে এসব ব্যাপার চুয়েট ভর্তি পরীক্ষার অফিশিয়াল সার্কুলার থেকে দেখে নিবে।
পরীক্ষার এখনো ১৫ দিনের মতো বাকি বিভিন্ন জায়গায় জার্নির সময় বাদ দিয়ে।এই ১৫ দিন কিভাবে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকাটা খুবই জরুরি।এক্ষেত্রে গদবাধা পড়া না পড়ে একটু টেকনিকালি আগালে ভালো আউটপুট পাবে আশা করি।এক্ষেত্রে চুয়েট ভর্তি পরীক্ষার আগে মাঝের এই সময়টাতে বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা আছে।ক্ষেত্রবিশেষে সবার ক্ষেত্রেই সময় আরো কমে আসবে।এমন অবস্থায় কেউ যদি চিন্তা করে থাকো যে প্রথম থেকে সব পড়া আবার পড়ে যাবে তাহলে তা ভুল।বরং সম্ভব না এক কথায়।কিছু টপিক এতো কমন থাকে যে সেগুলো প্রাকটিস করতে করতে তোমাদের সবারই প্রায় মুখস্ত।এরকম টপিকগুলো থেকে চুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় অবশ্যই প্রশ্ন থাকবে।যেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং গুলোর মধ্যে চুয়েটের পরীক্ষা সবার শেষে সেক্ষত্রে এই কমন বিষয় গুলোর অভিজ্ঞতা অন্যান্য পরীক্ষা থেকে নিয়ে চুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় এপ্লাই করার একটা ভালো সুযোগ থাকছে তোমাদের সামনে।এখন ঝামেলা হলো ওইসব প্রশ্ন নিয়ে যেগুলো সচরাচর তোমরা ফেইস করো না।এক্ষেত্রে তোমাদের একমাত্র হেল্পিং হ্যান্ড হতে পারে চুয়েট ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ব্যাংক।অবশ্যই এই প্রশ্ন ব্যাংক ভালো করে সলভ করে পরীক্ষার হলে ঢোকা উচিত তোমাদের।এর মাধ্যমে বিগত বছেরে আসা প্রশ্নগুলোর প্যাটার্ন সম্পর্কে ভালো ধারনা পাবে যা পরীক্ষার হলে যে কোন সিচুয়েশন ফেইস করতে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে।পাশাপাশি যেসব টপিক থেকে বিগত বছরগুলোয় প্রশ্ন হয়েছে সেসব টপিকগুলোর মধ্যে যদি কোনটায় সমস্যা বা কনফিউশন থেকে থাকে তা অবশ্যই ক্লিয়ার করে নিবা।
আমি বলছি না এই প্রিপারেশন তোমাকে চান্স পাইয়ে দিবে,কিন্তু এই ধাপে প্রিপারেশন নিলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও বাড়বে।
অনেকের প্রশ্ন থাকে ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটিগুলায় বইয়ের বাহির থেকে প্রশ্ন হয় কি না।
আমার উত্তর হবে:হয় না বললেই চলে,কিন্তু হলেও ৫% এর বেশি না।এখন দেখো এই ৫% ছাড়া বাকি ৯৫% যদি কেউ সঠিক করে আন্সার করতে পারে সে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হবে। :v
তবুও পরীক্ষার্থীদের মাঝে একটা প্রবনতা দেখা যায় যে কোয়শ্চেন পেপারকে দোষারোপ করার।
সুতরাং বইয়ের বাহির থেকে প্রশ্ন হয় তাই পরীক্ষা খারাপ হয়েছে এরুপ অযুহাত ভিত্তিহীন।
একটা ব্যাপার সহজ করে বললে বলা যায়,
যে প্রশ্নটা কেউ পারলো না,সেটা তুমি না পারলে কোন পার্থক্য হবে না।কিন্তু বই থেকে আসা সোজা একটা প্রশ্ন যেটা সবাই পারলো কিন্তু তুমি পারলা না তাহলে তুমি হাজার হাজার জনের পিছে চলে গেলা।সুতরাং সহজ প্রশ্নগুলোর প্রতি ফোকাস করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
চুয়েট ভর্তি পরীক্ষার প্রিপারেশন নিয়ে অনেক প্যানপ্যান করলাম। এবার আসি চুয়েট ক্যাম্পাস নিয়ে।
চুয়েট ক্যাম্পাস হল ১৭১ একর জায়গার উপর এক টুকরো সবুজ স্বর্গ।
সবুজ স্বর্গ কেনো বলছি তা পরীক্ষা দিতে আসলেই বুঝবে।আমাদের ক্যাম্পাসে আছে ৬ টি হল,দুইটি প্রশাসনিক ভবন,দুইটি লাইব্রেরি বিল্ডিং,৬ টি একাডেমিক ভবন,তিনটি ক্যান্টিন,একটি সুদৃশ্য লেক,সেন্ট্রাল মসজিদ,সেন্ট্রাল ফিল্ড,শিক্ষকদের আবাসিক এরিয়া,বাস্কেটবল গ্রাউন্ড,অডিটোরিয়াম,ক্যাফেটেরিয়া(under construction) এবং কিছু পুকুর।আর যেটার কথা না বললেই নয় তা হলো প্রচুর গাছপালা।এই অনিন্দ্যসুন্দর সবুজ স্বর্গই আমাদের ক্যাম্পাসকে অনন্য করে তুলেছে অন্য সব ক্যাম্পাস থেকে।বৃষ্টির দিনে ক্যাম্পাস হয়ে উঠে সবচেয়ে সুন্দর।
ভিজা পিচঢালা রাস্তা,সবুজের সমারোহে পরিপূর্ণ গাছপালা,কাঠবিড়ালি, পাখির ডাক,কাঠগোলাপ,হাসনাহেনার গন্ধ তোমার ক্যাম্পাস লাইফকে উপহার দিবে বিশেষ কিছু।সবুজের মাঝে রঙিন ফুলগুলোর কম্বিনেশন তোমার কাছে পৌছে দিবে চূড়ান্ত ভালোলাগার স্পর্শ।
চুয়েট সম্পূর্ণ একটা প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস।এখানে আছে কিছু দেশসেরা সাংস্কৃতিক সংগঠন।যাদের কর্মকান্ডে মুখর থাকে ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণা।যদি সংস্কৃতি মনা হয়ে থাকো তবে তো কথাই নেই!তোমার স্টেজ পারফরমেন্সে মাতবে সম্পূর্ন চুয়েট।আরো আছে ফটোগ্রাফিক সোসাইটি,ফিল্ম সোসাইটি,জার্নালিজম সোসাইটি,ডিবেটিং সোসাইটি,ক্যারিয়ার ক্লাব,স্পোর্টস ক্লাব,রবোটিক্স সহ বড় বড় সব ক্লাব এবং ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন।নিজেদের প্রকাশ করার একটা বড় প্ল্যাটফরম হলো চুয়েট।বিভিন্ন ভার্সিটির সাথে দেশের এবং দেশের বাহিরের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিযোগিতায় চুয়েটকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারো তুমিও।
কথায় আছে "১২ মাসে ১৩ পার্বন"।
আমাদের ক্যাম্পাসের ক্ষেত্রে বলা যায় " ১২ মাসে ১৩ প্রোগ্রাম" :v
প্রচুর পরিমাণ কালচারাল প্রোগ্রাম হয় এখানে।যেমন আছে ডিপার্টমেন্টাল প্রগ্রাম তেমনি আছে সংগঠন ভিত্তিক প্রোগ্রাম।সবচেয়ে সেরা আকর্ষন হচ্ছে চুয়েট rag programme।আর যারা কনসার্ট পছন্দ করো অথবা মেটাল লাভার তাদেরকে ওয়েলকাম।টানা ১৮ ঘন্টার কনসার্ট অন্য কোন ক্যাম্পাসে পাবে না।😉
বাংলাদেশের এমন কোন শীর্ষ ব্যান্ড নাই যারা চুয়েটে পারফর্ম করতে আসে নাই।
সবশষে আসি ক্যাম্পাসের সম্পর্কগুলোর কথা।
আমাদের প্রতিটা ডিপার্টমেন্টের প্রতিটা টিচার যথেষ্ট হেল্পফুল এবং ফ্রেন্ডলি।সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক এই ক্যাম্পাসের মূল সৌন্দর্য্য।
জুনিয়র রা যেমন সম্মান করে তেমনি ক্যাম্পাসের যে কোন সমস্যায় স্নেহ দিয়ে আগলে রাখে সিনিয়ররা।
চুয়েটে চলে ব্রাদারহুড।
পরিশেষে,অনুজ তোমাদের অপেক্ষায় ক্যাম্পাস।
নিজেদের মেধা,পরিশ্রম আর দক্ষতা দিয়ে অর্জন করে নাও চুয়েটকে।
একটা কথা মনে রাখবে,
যারা হয়তোবা ট্যালেন্ট তারা বুয়েট,রুয়েট, কুয়েটে ভর্তি হয়ে যাবে,
কিন্তু চুয়েট পরীক্ষা শেষে হওয়ায় চুয়েটে তারাই চান্স পাবে যাদের ট্যালেন্টের পাশাপাশি মনোবল এবং মানসিক শক্তি প্রো লেভেলের।
শুভ কামনা রইলো।
দেখা হচ্ছে প্রাণের ক্যাম্পাস চুয়েটে।
যে কোন জিজ্ঞাসা বা সমস্যা থাকলে জানাতে পারো।চেষ্টা করবো সাহায্য করার।
Ridwan Karim Khan
Department of civil engineering
CUET

Socializer Widget By Blogger Yard
SOCIALIZE IT →
FOLLOW US →
SHARE IT →

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Subscribe For Free Updates!

We'll not spam mate! We promise.