শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮

সাব্জেক্ট রিভিউ : ইলেকট্রনিকস & কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ECE)

সাব্জেক্ট রিভিউ : ইলেকট্রনিকস & কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ECE)
অনেকের কাছে ইসিই একটু অপরিচিত বা নতুন মনে হলেও বাংলাদেশে সাব্জেক্ট অনেক আগে থেকেই আছে। ইলেক্ট্রিক্যাল ফ্যাকাল্টির অন্যতম একটি সাব্জেক্ট বিএসসি(ইঞ্জিনিয়ারিং ইসিই) কুয়েট এ যাত্রা শুরু করে ২০০১ এ। দেশের অন্য জায়গায় যেমন রুয়েট বা চুয়েট এ ইসিই ইলেকট্রনিকস & টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ETE) নামে চালু আছে এবং ঢাবিতে পূর্বে ফলিত পদার্থবিজ্ঞান নামের বিষয় এর সিলেবাস কুয়েট এর ইসিইর সিলেবাসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।এছাড়া খুবি তে এবং কিছু কিছু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ইসিই বা টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এ আলাদাভাবে বিএসসি করার সুযোগ আছে।
এবার আসা যাক এখানে কি কি পড়াশোনা হয়?কুয়েট ইসিই ব্যাপক বিস্তৃত সাব্জেক্ট।
এখানকার পড়ার পরে ইলেক্ট্রিক্যাল ফ্যাকাল্টির যেকোনো সাব্জেক্টে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।আলোচনার সুবিদার্থে আমি ৩ টা ভাগে ভাগ করবো।১.ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ২.কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ৩.কম্পিউটার প্রোগ্রামিং।শুরেতেই আসি ইলেকট্রনিকস নিয়ে কি কি পড়াশোনা হয় এখানে।সেমিকন্ডাক্টর ম্যাটেরিয়াল এর বিভিন্ন গুনাবলি তাদের ভিতরে ইলেকট্রনের মুভমেন্ট কীভাবে হয়;ডায়োড,ট্রানজিটররের বেসিক ক্যারেক্টারগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা যেমন রেক্টিফিকেশন,এম্পলিফিকেশন;বিভিন্ন ধরনের লজিক গেট নিয়ে বিস্তর আলোচনা,মাইক্রোপ্রসেসর এর গঠন,ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা,মাইক্রোওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং,বিভিন্ন ধরনের সিগন্যাল প্রসেসিং যেটা বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মূলমন্ত্র,VLSI ডিজাইন,ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেকট্রনিকস ইত্যাদি।কমিউনিউনিকেশন এর কথা বললে এনালগ,ডিজিটাল,ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন,এন্টেনা,স্যাটেলাইট ইঞ্জিনিয়ারিং অপটিক্যাল ফাইবার টেকনোলজি ,টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এসব হাই প্রোফাইল সাব্জেক্ট নিয়ে পড়াশোনা চলে সারাদিন এখানে।সাথে বেসিক প্রোগ্রামিং C,C++,নিউমেরিক্যাল এনালাইসিস,ইইন্টারনেট প্রোগ্রামিং,ইন্টারনেটের আদ্যোপান্ত নিয়ে পড়াশোনা করানো হয় এখানে।এর পাশাপাশি ফিজিক্স,ম্যাথ,কেমিষ্ট্রি,হিউমেনিটিস এর কিছু কোর্স আছে এখানে।যাদের সার্কিট এনালাইসিস ভালো লাগে,ইলেকট্রনিক পড়ার মাঝে মজা খুজে পাও,ICT বই এর প্রতিটা অধ্যায় যাদের টানে,যারা ইন্টারনেট নিয়ে গবেষণা করতে ভালবাসো,কিভাবে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুলভ মুল্যে সবার কাছে দেয়া যায়, এসব নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে এবং যারা কম্পিউটারের মাদারবোর্ড এর দিকে তাকিয়ে ভাবো যে তুমি যদি মাদারবোর্ড বানাতে পারতে,ডিজাইন করতে পারতে এসব এর তাহলে কেমন হতো? এসব চিন্তা যদি কারো মাথায় আসে তাহলে নির্ভয়ে চলে আসো ইসিই ডিপার্টমেন্ট এ। নিজে হাতে কলমে সবসময় ওইসব কাজ করবে তখন!
এবার আসি ইসিই তে পড়ার পর কি করবো? শুরেতেই হায়ার স্টাডিজের কথা বলি।
ইসিই এমন একটা সাব্জেক্ট যেখানে পড়ে ইলেক্ট্রিক্যাল ফ্যাকাল্টির যেকোনো সাব্জেক্টের দিকে সুইচ করা সম্ভব। কেউ যদি চাও প্রোগ্রামিং এ ক্যারিয়ার গড়বা,তাহলে সেটা যেমন সম্ভব ঠিক তেমনি কেউ বায়োমেডিক্যাল এর দিকে যেতে চাইলে তাও সম্ভব।এছাড়া,এমবেডেড ইলেকট্রনিকস সিস্টেমের উপরে মাস্টার্স করাও যাবে। ইন্টেল,মাইক্রোসফট এর মত কোম্পানিতে জবও আমাদের পাওয়া সম্ভব। বিদেশে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি তে ইসিই থেকে পড়া স্টুডেন্টদের হিউজ চাহিদা আছে।নিসন্দেহে বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য জেতে চাইলে ইসিই একটি ব্যাপক বিস্তৃত সাব্জেক্ট।দেশে আমাদের জব করার মূল জায়গা হলো বিভিন্ন টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি যেমন;রবি।এখানে আলাদাভাবে টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার চাওয়া হয় যেদিক থেকে আমরা এগিয়ে থাকবো।আরও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক কোম্পানি যেমন;হয়াওয়ে,স্যামসাং এগুলোতে ইঞ্জিনিয়ারিং হিসেবে ইসিই দের ভালো কদর আছে। আরও বললে বিভিন্ন ব্রডব্যান্ড কোম্পানি তে আলদা ভাবে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমাদের কদর আছে।এছাড়া সফটওয়্যার ফিল্ডে সুইচ করে দেশের যেকোনো সফটওয়্যার ফার্মে যাওয়াটা আমাদের জন্য অনেকটাই ইজি।সরকারী জব তুলনামূলক কম কিন্তু ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ আমাদের জব করার সুযোগ রয়েছে।এছাড়া বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং প্রফেশন এ যেতে চাইলে ইসিই অন্যতম ভালো বিষয়।সর্বোপরি, ভবিষ্যত এর কথা চিন্তা করলে ইসিই দেশ,বিদেশ উভয় জায়গায় প্রেক্ষিতে একটি সম্ভাবনাময় সাব্জেক্ট।
-রাফি,ইসিই 2k17

Socializer Widget By Blogger Yard
SOCIALIZE IT →
FOLLOW US →
SHARE IT →

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Subscribe For Free Updates!

We'll not spam mate! We promise.